পাহারাদার
শহিদুল ইসলাম আকাশ
মাঝেমাঝে এলাকায় চোরের উপদ্রব বেড়ে যায়। তখন এ-বাড়ি ও-বাড়িতে চুরি হওয়ার খবর আসে প্রায়ই।
ছোট থেকেই দেখতাম, এই একটা ব্যাপারে আমার মা বেশ সজাগ। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দরজাজানালা ঠিকঠাকমতো লাগানো হয়েছে কিনা, খাটের নিচে, ঘরের কোনো অন্ধকার কোণায় কেউ লুকিয়েটুকিয়ে আছে কিনা__একবার দেখে নিতে ভুল করেন না কখনোই তিনি। দক্ষ পাহারাদারের মতো।
এখনো এর ব্যতিক্রম নেই।
আজও যখন তিনি ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘরের দরজাজানালা আরেকবার দেখে নিচ্ছিলেন, খাটের নিচে ও ঘরের অন্ধকার কোণায় কোণায় টর্চলাইট দিয়ে কেউ লুকিয়ে আছে কিনা দেখছিলেন__তখন হঠাৎ এক বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেলো আমার।
ফেসবুকের বন্ধু। চ্যাটে মাঝেমধ্যে যৎসামান্য আলাপ হয়। অনেকবার মেসেঞ্জারে কলও দিয়েছে, আমি রিসিভ করিনি কখনো। সেদিন কী মনে করে রিসিভ করে ফেললাম। জানিয়ে রাখি, বন্ধুটি একজন নারী। আপনাদের ঔৎসুক্য কমিয়ে দিলাম কিছুটা।
তার সাথে যখন কথা হচ্ছিলো সে জানালো, একটা ছেলের সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয় তার, পরবর্তীতে প্রেম। সম্পর্কটা বছর দু'য়ের কম হবে না। সম্প্রতি সে জানতে পেরেছে এমন অনেকের সাথেই ছেলেটির সম্পর্ক আছে এবং দুই কি তিন দিন আগে ২৯ বছর বয়সী ছেলেটি ১৭ বছরের অন্য একটি কিশোরী মেয়েকে বিয়ে করেছে।
বন্ধুর কাছে জানতে চাইলাম তাদের কখনো দেখাটেখা হয়েছে কিনা। এক মুহূর্তও না-ভেবে সে বললো, 'আপনি কি জানতে চাইছেন, তার সাথে আমি কখনো বিছানায় গেছি কিনা, শুয়েছি কিনা? উত্তরটা হ্যাঁ, কয়েকবার।'
তার স্পষ্টবাদী জবাব শুনে অবাকই হলাম। কেননা যে সমাজে 'গেঞ্জি' বলা যায় সহজেই কিন্তু 'ব্রা' শব্দটি বলতে নেই; 'আন্ডারওয়্যার' বলতে বাধা নেই, 'প্যান্টি' বলতে হয় সাবধানে__সে সমাজে একজন নারী একজন পুরুষ বন্ধুকে কী অবলীলায় বলছে, 'হ্যাঁ তার সাথে আমি শুয়েছি!'
বন্ধু বললো, 'মানুষকে ঘৃণারও উপযুক্ত হতে হয়, সে ঘৃণারও অযোগ্য।'
ফেসবুকে প্রেম, হাসি, দুঃখ, রাগের নানারকম ইমোজি আছে, কিন্তু ফোনে কথা বলার সময় এমন কোনো রকম কিছু দিয়ে অনুভূতি জানানোর সিস্টেম নেই। বন্ধুটি কথা বলতে বলতে তবু আমার বুঝার বাকি থাকলো না যে, ভেতরে ভেতরে সে কেমন গভীর করে কাঁদছে!
চুরির কথা বলছিলাম লেখার শুরুতে। দক্ষ পাহারাদারের মতো আমার মায়ের পাহারাদারির কথাও। আমাদের বাসায় আজ পর্যন্ত চুরির ঘটনা ঘটেনি। বললে অত্যুক্তি হবে না যে, মায়ের কঠিন পাহারাদারির জন্যই চুরি থেকে রক্ষা পেয়েছি হয়তোবা।
চোর ঘর চুরি করলেও, তবু কিছু থাকে, হোক-না তা নিতান্ত চারটা দেয়াল। কিন্তু মনের ঘরে একবার যখন চুরি হয়, তখন চুরি যাওয়ার বাকি থাকে না আর কিছুই।
আমার বন্ধুটির মতো ভালোবাসা ও বিশ্বাসের দারুণ এক স্নিগ্ধ সরলতার বোধ যার একবার চুরি হয়ে গেছে__সে-ই জানে শুধু__সেই চুরি ঠেকাবার সাধ্য আছে, পৃথিবীতে সে কোন পাহারাদার!
মাঝেমাঝে এলাকায় চোরের উপদ্রব বেড়ে যায়। তখন এ-বাড়ি ও-বাড়িতে চুরি হওয়ার খবর আসে প্রায়ই।
ছোট থেকেই দেখতাম, এই একটা ব্যাপারে আমার মা বেশ সজাগ। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে দরজাজানালা ঠিকঠাকমতো লাগানো হয়েছে কিনা, খাটের নিচে, ঘরের কোনো অন্ধকার কোণায় কেউ লুকিয়েটুকিয়ে আছে কিনা__একবার দেখে নিতে ভুল করেন না কখনোই তিনি। দক্ষ পাহারাদারের মতো।
এখনো এর ব্যতিক্রম নেই।
আজও যখন তিনি ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঘরের দরজাজানালা আরেকবার দেখে নিচ্ছিলেন, খাটের নিচে ও ঘরের অন্ধকার কোণায় কোণায় টর্চলাইট দিয়ে কেউ লুকিয়ে আছে কিনা দেখছিলেন__তখন হঠাৎ এক বন্ধুর কথা মনে পড়ে গেলো আমার।
ফেসবুকের বন্ধু। চ্যাটে মাঝেমধ্যে যৎসামান্য আলাপ হয়। অনেকবার মেসেঞ্জারে কলও দিয়েছে, আমি রিসিভ করিনি কখনো। সেদিন কী মনে করে রিসিভ করে ফেললাম। জানিয়ে রাখি, বন্ধুটি একজন নারী। আপনাদের ঔৎসুক্য কমিয়ে দিলাম কিছুটা।
তার সাথে যখন কথা হচ্ছিলো সে জানালো, একটা ছেলের সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয় তার, পরবর্তীতে প্রেম। সম্পর্কটা বছর দু'য়ের কম হবে না। সম্প্রতি সে জানতে পেরেছে এমন অনেকের সাথেই ছেলেটির সম্পর্ক আছে এবং দুই কি তিন দিন আগে ২৯ বছর বয়সী ছেলেটি ১৭ বছরের অন্য একটি কিশোরী মেয়েকে বিয়ে করেছে।
বন্ধুর কাছে জানতে চাইলাম তাদের কখনো দেখাটেখা হয়েছে কিনা। এক মুহূর্তও না-ভেবে সে বললো, 'আপনি কি জানতে চাইছেন, তার সাথে আমি কখনো বিছানায় গেছি কিনা, শুয়েছি কিনা? উত্তরটা হ্যাঁ, কয়েকবার।'
তার স্পষ্টবাদী জবাব শুনে অবাকই হলাম। কেননা যে সমাজে 'গেঞ্জি' বলা যায় সহজেই কিন্তু 'ব্রা' শব্দটি বলতে নেই; 'আন্ডারওয়্যার' বলতে বাধা নেই, 'প্যান্টি' বলতে হয় সাবধানে__সে সমাজে একজন নারী একজন পুরুষ বন্ধুকে কী অবলীলায় বলছে, 'হ্যাঁ তার সাথে আমি শুয়েছি!'
বন্ধু বললো, 'মানুষকে ঘৃণারও উপযুক্ত হতে হয়, সে ঘৃণারও অযোগ্য।'
ফেসবুকে প্রেম, হাসি, দুঃখ, রাগের নানারকম ইমোজি আছে, কিন্তু ফোনে কথা বলার সময় এমন কোনো রকম কিছু দিয়ে অনুভূতি জানানোর সিস্টেম নেই। বন্ধুটি কথা বলতে বলতে তবু আমার বুঝার বাকি থাকলো না যে, ভেতরে ভেতরে সে কেমন গভীর করে কাঁদছে!
চুরির কথা বলছিলাম লেখার শুরুতে। দক্ষ পাহারাদারের মতো আমার মায়ের পাহারাদারির কথাও। আমাদের বাসায় আজ পর্যন্ত চুরির ঘটনা ঘটেনি। বললে অত্যুক্তি হবে না যে, মায়ের কঠিন পাহারাদারির জন্যই চুরি থেকে রক্ষা পেয়েছি হয়তোবা।
চোর ঘর চুরি করলেও, তবু কিছু থাকে, হোক-না তা নিতান্ত চারটা দেয়াল। কিন্তু মনের ঘরে একবার যখন চুরি হয়, তখন চুরি যাওয়ার বাকি থাকে না আর কিছুই।
আমার বন্ধুটির মতো ভালোবাসা ও বিশ্বাসের দারুণ এক স্নিগ্ধ সরলতার বোধ যার একবার চুরি হয়ে গেছে__সে-ই জানে শুধু__সেই চুরি ঠেকাবার সাধ্য আছে, পৃথিবীতে সে কোন পাহারাদার!


Comments
Post a Comment