ইচ্ছের দাম
শহিদুল ইসলাম আকাশ
অনেকদিন থেকেই আমার মেয়েটার আবদার, সে পাখি পুষবে। একটা খাঁচা আর সাথে কয়েকটা পাখি কিনে দেওয়ার বায়না অনেকদিন ধরেই করে আসছে সে। তাকে অনেক বুঝালাম, আকাশসুদ্ধ পাখি থাকতে খাঁচায় ভরে পাখি পোষার কোনো মানে হয় না। খাঁচার ভেতর মুক্তির আশায় পাখি তার ডানা ঝাপটাবে, এর থেকে হৃদয়হীন ব্যাপার আর কিছুই হতে পারে না। তবু আমার কোনো কথাই শুনতে চায় না মেয়েটা। আমিও নাছোড়, কিনে দেবো না কিছুতেই।
কিন্তু শেষতক তার আবদার রাখতেই হলো, যখন সে বললো, কিছুদিন পরেই পাখিগুলোকে সে খাঁচার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দেবে, উড়িয়ে দেবে আকাশে। বললাম, কথা যেন ঠিক থাকে।
অনেক দেখেশুনে চার জোড়া বর্ণিল মুনিয়া পাখি কিনে আনলাম গত পরশু, সুদৃশ্য একটি খাঁচাসুদ্ধ। তাই দেখে মেয়ে আমার খুশিতে আটখানা। গতরাতে প্রতিদিনের চেয়ে একটু দেরিতেই ঘুমিয়েছে সে, পাখিগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো অনেকক্ষণ। সকালেও খুব তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠেছে, উঠেই খাঁচার পাশে। কী সব কথাটথাও বলে পাখিগুলোর সাথে। যেন পাখিরা তার ভাষা বুঝে! দেখে আমি আড়াল থেকে হাসি। পাগলী মেয়ে!
আজকেও এর ব্যতিক্রম হলো না। পাখিগুলোকে খাঁচার ভেতরে খাবার দিলো, পানি দিলো। একটু পরপর খাঁচার বাইরে থেকে ছুঁয়েও দিতে লাগলো। কে যেন একবার বলেছিলেন যে, মেয়েরা মায়াবতীর জাত, শুধু শুধু মায় দেখায়__কথাটা শতভাগই ঠিক। আমার ছোট্ট মেয়েটাও এর ব্যতিক্রম নয়। মায়াবতী!
খাঁচার পাশে পাখিগুলোকে নিয়ে মেয়েকে মেতে থাকতে দেখে একটা দীর্ঘশ্বাসও বেরিয়ে এলো গভীর থেকে__তার কথামতো সে কি পাখিগুলোকে একদিন ঠিকই মুক্ত করে দেবে তো? যদি না দেয়! এ দু'দিনে পাখিগুলোর সাথে তার যে সখ্যতা গড়ে উঠেছে, তাতে না দেওয়ার আশংকাই বেশি বলে মনে হচ্ছে। দেখি শেষতক কী হয়!
খাঁচার পাখি মুক্তির জন্য ডানা ঝাপটায়, কিন্তু মানুষ তাদের মুক্ত করে না। মানুষ বোঝে না যে, মানুষও তো একরকম খাঁচারই পাখি__একটা আকাশ আর চারপাশে কতো কতো দিগন্তের বেড়াজালে বন্দী সে। পার্থক্য হলো, খাঁচার পাখি বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়, কিন্তু বন্দী পাখির ইচ্ছেয় কী অনিচ্ছায় কিছুই আসে-যায় না। পাখির মুনিবের হাতেই সব। আর মানুষ! মানুষই শুধু এই আকাশ আর দিগন্তের খাঁচা থেকে বেরিয়ে কোথাও যেতে চায় না, তবু তাকে যেতেই হয়। পাখির মতো মানুষেরও একজন মুনিব আছেন। তিনি একদিন সে খাঁচা ভেঙে উড়িয়ে দেন।
মিলও আছে অবশ্য, তা হলো, পাখির মুনিবের মতো মানুষের সেই মুনিবেরও হৃদয় বড় কঠিন__মানুষের ইচ্ছায় কী অনিচ্ছায় তারও আসে-যায় না কিছুই।
খাঁচার পাখি দেখতে দেখতে জীবনের এই নিগূঢ় সত্যটা আমার মেয়েটা যদি কখনো বোঝে, তাহলে সে নিশ্চয় এক মুহূর্তের জন্যও পাখিগুলোকে বন্দী দেখতে চাইবে না। মুক্ত করে দেবেই।
আমি চাই, খাঁচার পাখির ইচ্ছের দাম যেন সে দেয়।
অনেকদিন থেকেই আমার মেয়েটার আবদার, সে পাখি পুষবে। একটা খাঁচা আর সাথে কয়েকটা পাখি কিনে দেওয়ার বায়না অনেকদিন ধরেই করে আসছে সে। তাকে অনেক বুঝালাম, আকাশসুদ্ধ পাখি থাকতে খাঁচায় ভরে পাখি পোষার কোনো মানে হয় না। খাঁচার ভেতর মুক্তির আশায় পাখি তার ডানা ঝাপটাবে, এর থেকে হৃদয়হীন ব্যাপার আর কিছুই হতে পারে না। তবু আমার কোনো কথাই শুনতে চায় না মেয়েটা। আমিও নাছোড়, কিনে দেবো না কিছুতেই।
কিন্তু শেষতক তার আবদার রাখতেই হলো, যখন সে বললো, কিছুদিন পরেই পাখিগুলোকে সে খাঁচার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দেবে, উড়িয়ে দেবে আকাশে। বললাম, কথা যেন ঠিক থাকে।
অনেক দেখেশুনে চার জোড়া বর্ণিল মুনিয়া পাখি কিনে আনলাম গত পরশু, সুদৃশ্য একটি খাঁচাসুদ্ধ। তাই দেখে মেয়ে আমার খুশিতে আটখানা। গতরাতে প্রতিদিনের চেয়ে একটু দেরিতেই ঘুমিয়েছে সে, পাখিগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো অনেকক্ষণ। সকালেও খুব তাড়াতাড়িই ঘুম থেকে উঠেছে, উঠেই খাঁচার পাশে। কী সব কথাটথাও বলে পাখিগুলোর সাথে। যেন পাখিরা তার ভাষা বুঝে! দেখে আমি আড়াল থেকে হাসি। পাগলী মেয়ে!
আজকেও এর ব্যতিক্রম হলো না। পাখিগুলোকে খাঁচার ভেতরে খাবার দিলো, পানি দিলো। একটু পরপর খাঁচার বাইরে থেকে ছুঁয়েও দিতে লাগলো। কে যেন একবার বলেছিলেন যে, মেয়েরা মায়াবতীর জাত, শুধু শুধু মায় দেখায়__কথাটা শতভাগই ঠিক। আমার ছোট্ট মেয়েটাও এর ব্যতিক্রম নয়। মায়াবতী!
খাঁচার পাশে পাখিগুলোকে নিয়ে মেয়েকে মেতে থাকতে দেখে একটা দীর্ঘশ্বাসও বেরিয়ে এলো গভীর থেকে__তার কথামতো সে কি পাখিগুলোকে একদিন ঠিকই মুক্ত করে দেবে তো? যদি না দেয়! এ দু'দিনে পাখিগুলোর সাথে তার যে সখ্যতা গড়ে উঠেছে, তাতে না দেওয়ার আশংকাই বেশি বলে মনে হচ্ছে। দেখি শেষতক কী হয়!
খাঁচার পাখি মুক্তির জন্য ডানা ঝাপটায়, কিন্তু মানুষ তাদের মুক্ত করে না। মানুষ বোঝে না যে, মানুষও তো একরকম খাঁচারই পাখি__একটা আকাশ আর চারপাশে কতো কতো দিগন্তের বেড়াজালে বন্দী সে। পার্থক্য হলো, খাঁচার পাখি বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়, কিন্তু বন্দী পাখির ইচ্ছেয় কী অনিচ্ছায় কিছুই আসে-যায় না। পাখির মুনিবের হাতেই সব। আর মানুষ! মানুষই শুধু এই আকাশ আর দিগন্তের খাঁচা থেকে বেরিয়ে কোথাও যেতে চায় না, তবু তাকে যেতেই হয়। পাখির মতো মানুষেরও একজন মুনিব আছেন। তিনি একদিন সে খাঁচা ভেঙে উড়িয়ে দেন।
মিলও আছে অবশ্য, তা হলো, পাখির মুনিবের মতো মানুষের সেই মুনিবেরও হৃদয় বড় কঠিন__মানুষের ইচ্ছায় কী অনিচ্ছায় তারও আসে-যায় না কিছুই।
খাঁচার পাখি দেখতে দেখতে জীবনের এই নিগূঢ় সত্যটা আমার মেয়েটা যদি কখনো বোঝে, তাহলে সে নিশ্চয় এক মুহূর্তের জন্যও পাখিগুলোকে বন্দী দেখতে চাইবে না। মুক্ত করে দেবেই।
আমি চাই, খাঁচার পাখির ইচ্ছের দাম যেন সে দেয়।
Comments
Post a Comment