নীল নগরে
শহিদুল ইসলাম আকাশ
মাথার উপর বিশাল আকাশ জুড়ে এক টুকরো উজ্জ্বল চাঁদ। আলোছায়ার এমন শতরঞ্জি বিছানো নেশা নেশা রাতগুলো এড়িয়ে থাকতে পারি না আমি। প্রতি জোছনা রাতে আমাকে বাইরে এসে তাই দাঁড়াতেই হয়, প্রতিবার। এসে নতুন করে এক অদ্ভুত ভালো লাগার আশ্লেষে আবিষ্কার করি হারিয়ে-যাওয়া, নুয়ে-পড়া আমিকে। বড় ভালো লাগে তখন আমার।
আজও তার ব্যতিক্রম হয় কী করে? কিন্তু একটু আগে বাইরে এসে দাঁড়াতেই হঠাৎ মনে পড়ে গেলো, আজ একবার আমার হাসপাতালে যাবার কথা ছিলো। ভুলে গেলাম কী করে!
খুব ঘনিষ্ঠ একজনের বছর তিনেক বয়সী কন্যাশিশুর বড় ধরনের অপারেশনের ডেট ছিলো আজ। এক সপ্তাহ আগেই আমাকে জানিয়েছিলেন তিনি, সকালে যখন মেয়েকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে, তখনো ফোনে জানানো হয় আমাকে। দোয়া করতে বললেন।
এরপর সারাদিন কী এক তুমুল ব্যস্ততার মধ্যে কেটে গেলো আমার, পরে আর খবরাখবর নেওয়া হয়নি। অথচ প্রয়োজন ছিলো, যাওয়া যখন হয়নি, একটু পরপর অন্তত ফোন করে খবরাখবর নেওয়া। হয়নি। এখন হঠাৎ তা খেয়াল হতেই, মনস্তাপ বাড়তে লাগলো খুব। ইচ্ছে হলে এখন একবার ফোন করে জেনে নেওয়া যায়, কিন্তু লজ্জায় ফোন করতেও হাত কাঁপছে।
এই মুহূর্তে চাঁদের সম্মোহনী রহস্যময় আলোর নিচে দাঁড়িয়ে মনে মনে কল্পনা করতে চাইছিলাম, মেয়েকে যখন অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলো, তখন বাইরে অপেক্ষারত তাঁকে। তখন কি তিনি থেমেথেমে এই ভাবছিলেন যে, মানবজীবনে 'অপেক্ষা' নামের শব্দটি না-থাকলেই কী হতো না!
কী এক তুমুল ব্যস্ততার মধ্যে দিনমান যায় আমার! কেবলই ছুটছি। দৌঁড় আর দৌঁড়, ঘোড়দৌঁড়ও এর কাছে নস্যি যেন। কীসের পেছনে এই অবিরাম ছুটে যাওয়া? সে কী কেবলই অভ্যাস!
একদিন এই ছুটে যাওয়া থমকে যাবে জানি, ঠায় দাঁড়িয়ে যাবো হঠাৎ কোথাও, কোনো নিঃসঙ্গ নীল নগরে--সেদিনই হয়তো বুঝতে পারবো শুধু, এক পলক দেখার বা একটু কথা বলবার মানুষগুলোকে আমি হারিয়ে ফেলেছি সেই কবেই--এই আমার নিজের অজান্তেই!
মাথার উপর বিশাল আকাশ জুড়ে এক টুকরো উজ্জ্বল চাঁদ। আলোছায়ার এমন শতরঞ্জি বিছানো নেশা নেশা রাতগুলো এড়িয়ে থাকতে পারি না আমি। প্রতি জোছনা রাতে আমাকে বাইরে এসে তাই দাঁড়াতেই হয়, প্রতিবার। এসে নতুন করে এক অদ্ভুত ভালো লাগার আশ্লেষে আবিষ্কার করি হারিয়ে-যাওয়া, নুয়ে-পড়া আমিকে। বড় ভালো লাগে তখন আমার।
আজও তার ব্যতিক্রম হয় কী করে? কিন্তু একটু আগে বাইরে এসে দাঁড়াতেই হঠাৎ মনে পড়ে গেলো, আজ একবার আমার হাসপাতালে যাবার কথা ছিলো। ভুলে গেলাম কী করে!
খুব ঘনিষ্ঠ একজনের বছর তিনেক বয়সী কন্যাশিশুর বড় ধরনের অপারেশনের ডেট ছিলো আজ। এক সপ্তাহ আগেই আমাকে জানিয়েছিলেন তিনি, সকালে যখন মেয়েকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়েছে, তখনো ফোনে জানানো হয় আমাকে। দোয়া করতে বললেন।
এরপর সারাদিন কী এক তুমুল ব্যস্ততার মধ্যে কেটে গেলো আমার, পরে আর খবরাখবর নেওয়া হয়নি। অথচ প্রয়োজন ছিলো, যাওয়া যখন হয়নি, একটু পরপর অন্তত ফোন করে খবরাখবর নেওয়া। হয়নি। এখন হঠাৎ তা খেয়াল হতেই, মনস্তাপ বাড়তে লাগলো খুব। ইচ্ছে হলে এখন একবার ফোন করে জেনে নেওয়া যায়, কিন্তু লজ্জায় ফোন করতেও হাত কাঁপছে।
এই মুহূর্তে চাঁদের সম্মোহনী রহস্যময় আলোর নিচে দাঁড়িয়ে মনে মনে কল্পনা করতে চাইছিলাম, মেয়েকে যখন অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলো, তখন বাইরে অপেক্ষারত তাঁকে। তখন কি তিনি থেমেথেমে এই ভাবছিলেন যে, মানবজীবনে 'অপেক্ষা' নামের শব্দটি না-থাকলেই কী হতো না!
কী এক তুমুল ব্যস্ততার মধ্যে দিনমান যায় আমার! কেবলই ছুটছি। দৌঁড় আর দৌঁড়, ঘোড়দৌঁড়ও এর কাছে নস্যি যেন। কীসের পেছনে এই অবিরাম ছুটে যাওয়া? সে কী কেবলই অভ্যাস!
একদিন এই ছুটে যাওয়া থমকে যাবে জানি, ঠায় দাঁড়িয়ে যাবো হঠাৎ কোথাও, কোনো নিঃসঙ্গ নীল নগরে--সেদিনই হয়তো বুঝতে পারবো শুধু, এক পলক দেখার বা একটু কথা বলবার মানুষগুলোকে আমি হারিয়ে ফেলেছি সেই কবেই--এই আমার নিজের অজান্তেই!
Comments
Post a Comment