টান
শহিদুল ইসলাম আকাশ
শৈশবে আমার এক বন্ধুর ঘুড়ি উড়াবার শখ ছিলো। তখন হাটবাজারে নানানরঙের ঘুড়ি কিনতে পাওয়া যেতো, স্কুলে যাওয়ার সময় যে হাতখরচ সে পেতো, সেই টাকা জমিয়ে বাজার থেকে ঘুড়ি কিনতো নিয়মিত। সাথে নানা বর্ণিল রঙের সুতো, নাটাইও।
একটা সময় সে নিজেই ঘুড়ি বানানোর কৌশল রপ্ত করে ফেললো। কতো বিচিত্র বিচিত্র ঘুড়ি বানাতো তখন সে, দেখে অভিভূত না-হওয়ার উপায় ছিলো না।
সে যখন খোলা প্রান্তরে এসে ঘুড়ি উড়াতো, নাটাই হাতে ঘুড়ির দিকে চেয়ে থাকতো, কখনো নাটাই থেকে সুতো ছাড়ে তো আবার কখনো গুটায়--তখন তাকে দেখে মনে হতো, যেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখি কেউ। আমি আকাশে উড়তে-থাকা ঘুড়ির দিকে না-তাকিয়ে, বন্ধুর দিকেই তাকিয়ে থাকতাম নির্নিমেষ। তার খুশি দেখে ভালো লাগতো ভীষণ।
সন্ধ্যে ঘনাবার আগে আগেই নাটাইতে সুতো গুটিয়ে নিতো হতো আবার। ঘুড়ি আকাশ থেকে নামতে চাইতো না যেন, বন্ধুরও যেন ইচ্ছে হতো না নামিয়ে আনতে। অনিচ্ছাসত্ত্বেও সন্ধ্যের আগে আগে গুটিয়ে ফেলতে হতো তবু।
বর্তমানে বড় ব্যস্ত একটা জগতে বাস করি আমরা। সবাই যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আমি এবং আমার সেই বন্ধুরও একই অবস্থা। খুব কমই দেখাসাক্ষাৎ হয়, কোনো দৈবদুর্বিপাকে দেখা হয়ে যায় কদাচিৎ। দেখা হলেই, শৈশবটাকে টেনে আনি, বলতে ভুলি না তার ঘুড়ি আসক্তির সেই সব দিন। শুনে সে উদাস হয়ে যায়, হয়তো মন উচাটন করে উঠে তখন তার।
মানুষের মনটা তো আর ঘুড়ি নয়, মনের কোনো সুতো নেই, নাটাইও নেই--তবু হঠাৎ হঠাৎ তারও কোথায় যেন কেমন ভীষণ টান লাগে!
শৈশবে আমার এক বন্ধুর ঘুড়ি উড়াবার শখ ছিলো। তখন হাটবাজারে নানানরঙের ঘুড়ি কিনতে পাওয়া যেতো, স্কুলে যাওয়ার সময় যে হাতখরচ সে পেতো, সেই টাকা জমিয়ে বাজার থেকে ঘুড়ি কিনতো নিয়মিত। সাথে নানা বর্ণিল রঙের সুতো, নাটাইও।
একটা সময় সে নিজেই ঘুড়ি বানানোর কৌশল রপ্ত করে ফেললো। কতো বিচিত্র বিচিত্র ঘুড়ি বানাতো তখন সে, দেখে অভিভূত না-হওয়ার উপায় ছিলো না।
সে যখন খোলা প্রান্তরে এসে ঘুড়ি উড়াতো, নাটাই হাতে ঘুড়ির দিকে চেয়ে থাকতো, কখনো নাটাই থেকে সুতো ছাড়ে তো আবার কখনো গুটায়--তখন তাকে দেখে মনে হতো, যেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখি কেউ। আমি আকাশে উড়তে-থাকা ঘুড়ির দিকে না-তাকিয়ে, বন্ধুর দিকেই তাকিয়ে থাকতাম নির্নিমেষ। তার খুশি দেখে ভালো লাগতো ভীষণ।
সন্ধ্যে ঘনাবার আগে আগেই নাটাইতে সুতো গুটিয়ে নিতো হতো আবার। ঘুড়ি আকাশ থেকে নামতে চাইতো না যেন, বন্ধুরও যেন ইচ্ছে হতো না নামিয়ে আনতে। অনিচ্ছাসত্ত্বেও সন্ধ্যের আগে আগে গুটিয়ে ফেলতে হতো তবু।
বর্তমানে বড় ব্যস্ত একটা জগতে বাস করি আমরা। সবাই যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। আমি এবং আমার সেই বন্ধুরও একই অবস্থা। খুব কমই দেখাসাক্ষাৎ হয়, কোনো দৈবদুর্বিপাকে দেখা হয়ে যায় কদাচিৎ। দেখা হলেই, শৈশবটাকে টেনে আনি, বলতে ভুলি না তার ঘুড়ি আসক্তির সেই সব দিন। শুনে সে উদাস হয়ে যায়, হয়তো মন উচাটন করে উঠে তখন তার।
মানুষের মনটা তো আর ঘুড়ি নয়, মনের কোনো সুতো নেই, নাটাইও নেই--তবু হঠাৎ হঠাৎ তারও কোথায় যেন কেমন ভীষণ টান লাগে!
Comments
Post a Comment