ছুঁয়ে দিই
শহিদুল ইসলাম আকাশ
তারিখটা স্পষ্ট করে লেখা ২৯/০৬/২০০৩। বার কী তা পাঠোদ্ধার করতে বেগ হতে হলেও, অনুমানে বুঝলাম, রবিবার। সময়, ভোর চারটা।
একটা সময় আমি নিয়মিত ডায়েরি লিখতাম। সেই সময়ের কয়েকটা ডায়েরি এখনো সংগ্রহে আছে আমার, অনেকগুলোই হারিয়ে গেছে--হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোরই মতন। সেই সবের কোনোটাতে ভুল ছন্দের কবিতা লিখেছি তো, কোনো কোনোটাতে দিনলিপি লিখে রাখতাম।
মাঝেমাঝে আমি যখন লেখার মতো কোনো বিষয় পাই না, তখন সংগ্রহে থাকা এইসব ডায়েরি খুলে বসি। তা পড়তে গিয়ে কখনো মনে মনে হাসি, কখনোবা বিষণ্ণ হই।
আজকেও আমার পুরোনো একটা ডায়েরি খুলে বসতেই, একটা পাতায় চোখ আটকে গেলো। ওই যে, ২৯/০৬/২০০৩...
সেদিন রবিবারই ছিলো, হয়তোবা। মার্জিন টানা ডায়েরিতে ওই দিনের লেখা পড়তে লাগলাম---
"কলেজে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে মেয়েলি কণ্ঠে কে যেন ডেকে উঠলো, 'এই যে...শুনছেন...' বাইকের গতি বেশি ছিলো বলে অনেকদূর চলে এসেছি। ডাক শুনে ব্রেক করলাম। বাইক ঘুরিয়ে নিলাম। এক পলক দেখতে গিয়েই আমার চোখ আটকে গেলো হঠাৎ। এ যেন সাক্ষাত কোনো পরী। মানুষ এতো সুন্দর হয়! মেয়েটার দিকে আমি তাকিয়েই রইলাম, চুপচাপ। মেয়েটা বললো, 'আপনার বাইকের স্ট্যান্ডটা তুলেননি, তাই ডাকতে হলো। চলন্ত অবস্থায় কোনো দুর্ঘটনা হয়ে যেতে পারে। দয়া করে এখন স্ট্যান্ড তুলুন।' আমার খেয়াল হলো, অনবধানে বাইকের স্ট্যান্ডটা আসলেই তুলা হয়নি। আমি মেয়েটার উপর থেকে চোখ না-সরিয়েই স্ট্যান্ড তুললাম। হেসে ধন্যবাদ দিলাম।"
তারপর পরের পৃষ্ঠার পাতা উল্টালাম। তাতে লেখা--
"আমি জানি না মেয়েটার সাথে এই জীবনে আমার আর কখনো দেখা হবে কিনা। হতে পারে, আবার নাও হতেও পারে। হোক বা হোক, এই বিনিদ্র রাত সেই মেয়েটার জন্যই। আচ্ছা, মেয়েটা কি কোনোদিনও জানবে, শুধু তার জন্যই জেগে জেগে আমি ভোর ডাকছি, কী এক পরম গভীর আবেশে!"
এটুকু পড়ে এরপরে কী লিখেছি, তা না-পড়ে ডায়েরিটা বন্ধ করে তুলে রাখার জন্য শেল্ফের কাছে এগিয়ে গেলাম। কতোকাল আগের লেখা, অর্থহীন কী সব ছাইপাঁশ লিখেছি তখন!
অর্থহীন যদিও, কিন্তু শেল্ফে ডায়েরিটা তুলে রাখতে গিয়েও কেন জানি রাখতেও পারলাম না। এরপরে কিছু লিখেছিলাম কিনা, তা দেখার খুব ইচ্ছে হলো।
যে জীবন দোয়লের, ফড়িঙয়ের, সে জীবনে যা যায় তা যায়ই কেবল, তাকে আর ফিরে পাওয়া হয় না। কিন্তু ফিরে তো দেখা যায়। নাকি?
পুরোনো দিন হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেওয়া যেন। আমি ডায়েরিটা খুলে বসলাম আবার। এবং পড়ছি...
তারিখটা স্পষ্ট করে লেখা ২৯/০৬/২০০৩। বার কী তা পাঠোদ্ধার করতে বেগ হতে হলেও, অনুমানে বুঝলাম, রবিবার। সময়, ভোর চারটা।
একটা সময় আমি নিয়মিত ডায়েরি লিখতাম। সেই সময়ের কয়েকটা ডায়েরি এখনো সংগ্রহে আছে আমার, অনেকগুলোই হারিয়ে গেছে--হারিয়ে যাওয়া দিনগুলোরই মতন। সেই সবের কোনোটাতে ভুল ছন্দের কবিতা লিখেছি তো, কোনো কোনোটাতে দিনলিপি লিখে রাখতাম।
মাঝেমাঝে আমি যখন লেখার মতো কোনো বিষয় পাই না, তখন সংগ্রহে থাকা এইসব ডায়েরি খুলে বসি। তা পড়তে গিয়ে কখনো মনে মনে হাসি, কখনোবা বিষণ্ণ হই।
আজকেও আমার পুরোনো একটা ডায়েরি খুলে বসতেই, একটা পাতায় চোখ আটকে গেলো। ওই যে, ২৯/০৬/২০০৩...
সেদিন রবিবারই ছিলো, হয়তোবা। মার্জিন টানা ডায়েরিতে ওই দিনের লেখা পড়তে লাগলাম---
"কলেজে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পেছন থেকে মেয়েলি কণ্ঠে কে যেন ডেকে উঠলো, 'এই যে...শুনছেন...' বাইকের গতি বেশি ছিলো বলে অনেকদূর চলে এসেছি। ডাক শুনে ব্রেক করলাম। বাইক ঘুরিয়ে নিলাম। এক পলক দেখতে গিয়েই আমার চোখ আটকে গেলো হঠাৎ। এ যেন সাক্ষাত কোনো পরী। মানুষ এতো সুন্দর হয়! মেয়েটার দিকে আমি তাকিয়েই রইলাম, চুপচাপ। মেয়েটা বললো, 'আপনার বাইকের স্ট্যান্ডটা তুলেননি, তাই ডাকতে হলো। চলন্ত অবস্থায় কোনো দুর্ঘটনা হয়ে যেতে পারে। দয়া করে এখন স্ট্যান্ড তুলুন।' আমার খেয়াল হলো, অনবধানে বাইকের স্ট্যান্ডটা আসলেই তুলা হয়নি। আমি মেয়েটার উপর থেকে চোখ না-সরিয়েই স্ট্যান্ড তুললাম। হেসে ধন্যবাদ দিলাম।"
তারপর পরের পৃষ্ঠার পাতা উল্টালাম। তাতে লেখা--
"আমি জানি না মেয়েটার সাথে এই জীবনে আমার আর কখনো দেখা হবে কিনা। হতে পারে, আবার নাও হতেও পারে। হোক বা হোক, এই বিনিদ্র রাত সেই মেয়েটার জন্যই। আচ্ছা, মেয়েটা কি কোনোদিনও জানবে, শুধু তার জন্যই জেগে জেগে আমি ভোর ডাকছি, কী এক পরম গভীর আবেশে!"
এটুকু পড়ে এরপরে কী লিখেছি, তা না-পড়ে ডায়েরিটা বন্ধ করে তুলে রাখার জন্য শেল্ফের কাছে এগিয়ে গেলাম। কতোকাল আগের লেখা, অর্থহীন কী সব ছাইপাঁশ লিখেছি তখন!
অর্থহীন যদিও, কিন্তু শেল্ফে ডায়েরিটা তুলে রাখতে গিয়েও কেন জানি রাখতেও পারলাম না। এরপরে কিছু লিখেছিলাম কিনা, তা দেখার খুব ইচ্ছে হলো।
যে জীবন দোয়লের, ফড়িঙয়ের, সে জীবনে যা যায় তা যায়ই কেবল, তাকে আর ফিরে পাওয়া হয় না। কিন্তু ফিরে তো দেখা যায়। নাকি?
পুরোনো দিন হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেওয়া যেন। আমি ডায়েরিটা খুলে বসলাম আবার। এবং পড়ছি...
Comments
Post a Comment