ঘাসফড়িঙের মতো

শহিদুল ইসলাম আকাশ


ঘাসফড়িঙটার দিকে তাকিয়ে আছি। সে কী উড়াউড়ি তার। কোথাও দু'দণ্ড স্থির হয়ে বসছে না ফড়িঙটা। একবার এখানে তো একবার ওখানে__উড়ছেই কেবল।

কিছুক্ষণ পর ফড়িঙটা কোথায় জানি মিলিয়ে গেলো। অপেক্ষায় রইলাম, আবার যদি আসে! কিন্তু না, আর এলো না। অন্য কোথাও, অন্য কোনো খানে উড়ছে হয়তো মনের সুখে। উড়ুক। আমিও ক্ষান্ত দিলাম। অনেক কাজ পড়ে আছে, সেই সব কাজে মনোযোগী হওয়া যাক। কোনো একটা ফড়িঙের উড়াউড়ি, জগতে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নয়। তাছাড়া মানুষ তো ফড়িঙ নয়, সৃষ্টির সেরা জীব। তুচ্ছ একটা ফড়িঙ নিয়ে এতো ভাবনার কোনো কারণ নেই, থাকতেও পারে না। আমি এমন করে ভাবতে লাগলাম।

কিন্তু ভাবলেই কি হয়!

পরক্ষণেই মনে মনে বললাম, মানুষ ফড়িঙ নয়, কিন্তু ফড়িঙের ব্যতিক্রমও তো কিছু নেই মানুষের মধ্যে। মানুষও দিবানিশি উড়ে, স্থির তবু দু'দণ্ড স্থিরতা নেই মানুষেরও। মানুষের সমস্ত উড়াউড়ি তার মনে মনে বলেই, তা দেখা যায় না শুধু। মনে মনে কোথায় কোথায় যে উড়ে বেড়ায় মানুষ, তার কি ঠিক থাকে!

সবাই বুদ্ধ অথবা চৈতন্য হতে না-পারলেও, মূলত গৃহী বলে কেউ নেই এই সংসারে, মনে মনে প্রত্যেকেই একেকজন বাউল সন্ন্যাসী। একেকজন বুদ্ধ অথবা চৈতন্যই।

Comments